Skin Care

ঈদের রাতের সাজ হোক গ্ল্যামারাস

ঈদের দিন সকালটা সাধারণত আমরা মেয়েরা একদম সিম্পল থাকতে পছন্দ করি। তারপর বেলা পরার সময় বা দুপুরের দিকে রেডি হয়ে হালকা সাজলেও,রাতের লুক হয় একদম জমকালো।

আর জমকালো হবে না-ই বা কেনো। ঈদের নতুন জামা, নতুন মেকআপ সবকিছু দিয়ে তো একটা গর্জিয়াস লুক নেয়াই লাগে।

আর সচারাচর দেখা যায়, ঈদের দিন রাতে হয়তো বাইরে পরিবার  নিয়ে ঘুরতে যাওয়া হয় বা আত্নীয়দের বাসায় দাওয়াত থাকে। তাই ঈদের খুশি আর ঘুরতে যাওয়া এই দুইয়ের আনন্দ মিলিয়ে তো মনের আনন্দে নতুন জামা পড়ে সুন্দর করে সাজগোজও করা হয়। একেকজন একেক ভাবে সাজতে পছন্দ করে আর একেক ধরনের লুকে সবাইকে দেখতেও বেশ ভালো লাগে। ঈদকে ঘিরে নতুন জামার পাশাপাশি নতুন মেকআপ কেনাটাও মাস্ট।

তাই আজকের ব্লগে কিভাবে একটা জমকালো ঈদের গ্ল্যামারাস সাজের জন্য স্কিন প্রিপেয়ার করতে পারেন আর কি ব্র্যান্ডের মেকআপ কিনে কেমন লুক ক্রিয়েট করতে পারেন, সেগুলো নিয়েই আলোচনা করবো। 

আশা করি সামনে ঈদে এই সাজেশনগুলো আপনাদের হেল্প করবে অনেক।

আর আজকে আপনাদের ওয়ান ব্র্যান্ড স্কিন প্রিপেয়ার প্রোডাক্টস আর মেকআপ প্রোডাক্ট সাজেস্ট করবো যাতে করে একেক ব্র্যান্ডের ভিড়ে আপনারা কনফিউজড না হয়ে যান আর শপিং-এর টাইমও যেন বাঁচে। আর আজকে যেই ব্র্যান্ড টা সাজেস্ট করবো তা হলো প্রায় সব মেয়েদেরই পছন্দের মেকআপ ব্র্যান্ড ফ্লোরমার। যেহেতু, ফ্লোরমারের ফিনিশিং আর কোয়ালিটি একদম হাই-এন্ড আর বাংলাদেশে এর অরিজিনাল পাওয়া-ও যায় খুব সহজেই তাই সবদিক বিবেচনা করে এই ব্র্যান্ড টাই আপনাদের জন্য সিলেক্ট করলাম। ওহ হ্যাঁ! এই ব্র্যান্ড টা সিলেক্ট করার আরো একটা কারণ হলো এই ব্র্যান্ডে মেকআপ আর স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস – দুটোই বেশ ভালো মানের আছে। তাই এক ব্র্যান্ডেই পেয়ে যাচ্ছেন সব। 

স্কিন প্রিপেয়ার – ঈদের দিনের বেলার মতো ঈদের রাতের সাজ হালকা বেইজের হয় না। যেহেতু, সবাই চায় একটু এক্সট্রা-অরডিনারি ভাবে সাজতে আর একটা স্মুদ লুক নিতে তাই এর জন্য স্কিন আগে প্রিপেয়ার করে নেয়াটা খুব জরুরি।

তো স্কিন প্রিপেয়ারের জন্য আগে ভালো করে ক্লিঞ্জার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। ক্লিঞ্জার হিসেবে ফ্লোরমার 3 in 1 ক্লিঞ্জার টা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, ক্লিঞ্জার হিসেবে এটি খুবই ভালো আর মুখ ক্লিনও করে একদম ভেতর থেকে। এরপর লাগিয়ে নিন একটি মাস্ক। এই ক্ষেত্রে ফ্লোরমার গ্লোয়িং পিল-অফ ফেস মাস্ক টা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, এতে থাকা গোল্ড পার্টিকেলস আপনার স্কিনে দিবে ইন্সট্যান্ট গ্লো যা আপনার মেকআপ করবে দারুণ ভাবে স্মুদ। এবার মাস্ক শুকিয়ে গেলে তা ক্লিন করে নিন আর অ্যাপ্লাই করুন ময়েশ্চারাইজার। ফ্লোরমারের বেশ ভালো কিছু ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম রয়েছে যা আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন। 

ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে নেয়ার পর আপনার স্কিন কিন্ত একদম প্রিপেয়ারড। তাই এখন চলে যেতে পারেন মেইন মেকআপ লুকে।

মেকআপ লুক –  শুরুতেই বলেছি মেকআপ লুক একেকজন একেকরকম পছন্দ করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু লুক রয়েছে যেগুলো সবার জন্যই ক্রিয়েট করা খুব ইজি হয়। আর দেখতে বেশ গ্ল্যামারাসও লাগে। আজকে সেই রকমই একটি লুকের বেইস আর আই-মেকআপের ডিটেইলস বলবো যেন আপনারাও খুব সহজে ঈদে গ্ল্যামারাস একটা লুক নিতে পারেন।

তো প্রথমেই আসি বেইস মেকআপে। প্রথমে বেইস নিয়ে বলছি তার মানে এই না যে আপনারও প্রথমে বেইজ মেকআপ করতে হবে। আপনার সুবিধা অনুযায়ী আপনি চাইলে আই-মেকআপ দিয়েও শুরু করতে পারেন।

বেইজের জন্য প্রথমেই দিয়ে নিতে হবে প্রাইমার। এর জন্য বেছে নিন ফ্লোরমার ইলুমিনেটিং প্রাইমার। এটি স্কিনের ময়েশ্চার ব্যালেন্সড রাখবে আর বেইস রাখবে লং-লাস্টিং। এরপর ব্যবহার করুন স্ট্রোবিং ক্রিম। ফ্লোরমারের স্ট্রোবিং ক্রিম টা একদম গ্লোয়িং একটা ইফেক্ট দেয় যা আপনার মেকআপ লুককে করে তুলবে প্লাম্পি আর ডিউয়ি। বর্তমানে কোরিয়ান মেকআপ লুক ট্রেন্ডের মতো মেকআপ ফিনিশিং আনতে স্ট্রোবিং ক্রিম মাস্ট।আর রাতের মেকঅভার একটু শাইনি বা ডিউয়ি হলেই বেশি ভালো লাগে।

এরপর আপনার স্কিনের প্রবলেম এরিয়া বুঝে কালার কারেকশন করা লাগলে ফ্লোরমারের পিচ, গ্রিন, পার্পেল কালার কারেক্টর গুলোর যেকোনোটি বেছে নিন। কালার কারেকশন হয়ে গেলে পরের ধাপ হলো ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই। যেহেতু এই ধরণের গ্ল্যাম লুক গুলোতে একটু ফুল কভারেজ বেশি ভালো লাগে তাই বেছে নিন ফ্লোরমার পারফেক্ট কভারেজ ফাউন্ডেশনটি। কারণ, এটি বেশ ভালো ফুল কভারেজের পাশাপাশি দেয় ভেল্ভেটি একটা ফিনিশ। এখন কন্সিলার দেয়ার পালা। আর এর জন্য ফ্লোরমার স্টে পারফেক্ট কন্সিলারটি হবে বেস্ট। কারণ, এটি যেমন হাইড্রেটিং তেমনি অনেক ইজি টু ব্লেন্ড আর নামের মতো আসলেও দেয় পারফেক্ট কভারেজ। 

এই পর্যায়ে লুজ পাউডার দিয়ে বেকিং করবো নাকি কম্প্যাক্ট পাউডার দিয়ে সেট করে নিবো? এই ব্যাপার টা নিয়ে অনেকেই কনফিউজড থাকে। কিন্তু আসলে যাদের স্কিন ড্রাই তারা বেকিং অ্যাভোয়েড করে কম্প্যাক্ট দিয়ে সেট করে নেয়াই বেটার। আর যাদের স্কিন অয়েলি তারা বেকিং করে নিবেন কারণ, তাতে মেকআপ অয়েলি হবে না সহজে। ফ্লোরমার লুজ আর কম্প্যাক্ট পাউডার দুটোই আছে। বেছে নিতে পারেন আপনার প্রয়োজন মতো।

এই স্টেপটি হলো কনট্যুরিং বা ব্রোঞ্জিং করার। ফ্লোরমার ব্রোঞ্জিং পাউডার দিয়ে সেরে নিন আপনার কনট্যুরিং বা ব্রোঞ্জিং। ব্লাশ অ্যাপ্লাইয়ের জন্য ফ্লোরমার ব্লাশ-অন থেকে বেছে নিন আপনার পছন্দের শেইডটি। তবে আমি সাজেস্ট করবো যেহেতু রাতের বেলার সাজ তাই একটু পিচ টাইপ কালারের ব্লাশ অ্যাপ্লাই করার। এর জন্য ফ্লোরমার ব্লাশের পিওর পিচ শেইড টা হবে বেস্ট। দুই গাল ভরে ইচ্ছেমতো ব্লাশ দিয়ে নেয়ার পর চলে যান হাইলাইটার পার্টে। আর এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন ফ্লোরমারের লিকুইড হাইলাইটার গুলো। লিকুইড ব্লাশ থেকে সানসেট গ্লো শেইডটি ব্যবহার করতে পারেন। যেকোনো স্কিন টোনেই এই শেইডটি মানিয়ে যায় খুব সুন্দর ভাবে।

আপনার হাইলাইট এরিয়া গুলোতে হাইলাইটার দিয়ে নিয়ে এবার ফ্লোরমার অল ডে ফিক্স সেটিংস স্প্রে দিয়ে পুরো বেইস মেকআপ সেট করে নিন আর এইতো কমপ্লিট হয়ে গেলো আপনার পারফেক্ট মেকআপ বেইস।

এখন আসা যাক আই-মেকআপে। বেইজ আসলে একই নিয়মে ক্রিয়েট করা হলেও বিপত্তিটা ঘটে আই-মেকআপের বেলায়। কারণ, কি বা কেমন আই-মেকআপ করবো তা নিয়ে অনেকেই থাকেন একদম দ্বিধা-দ্বন্দের মধ্যে। তাই এমন একটা আই লুকের ডিটেইলস আজকে বলবো যাতে হাজারো কনফিউশন থাকলেও এই লুক করে ফেলতে পারবেন সহজেই আর দেখতেও লাগবে বেশ ট্রেন্ডি।

আই লুক ক্রিয়েট করতে প্রথমে কন্সিলার দিয়ে বেইস করে নিন। এরপর তা হালকা একটু পাউডার দিয়ে সেট করে নিয়ে শুরু করে দিন মেইন মেকআপ। এর জন্য প্রথমে ফ্লোরমার ন্যুড আইশ্যাডো প্যালেট থেকে আপনার ড্রেসের সাথে মানানসই একটা একদম হালকা শেইড নিয়ে ক্রিজের উপরে ব্যবহার করুন ট্রানজিশন শেইড হিসেবে। এবার ফ্লোরমার স্মোকি আইশ্যাডো প্যালেট থেকে ডিপ যেকোনো শেইড নিন এবং তা একটি ব্লেন্ডিং ব্রাশের সাহায্যে চোখের আউটার কর্নারে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর সেইম আইশ্যাডো প্যালেট থেকে আপনার ড্রেসের সাথে মানানসই একটি ডিপ শেইড নিয়ে আই লিডে অ্যাপ্লাই করুন এবং ব্লেন্ডিং ব্রাশের সাহায্যে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে ফ্লোরমার গ্লিটার বম্ব থেকে হালকা করে গ্লিটার অ্যাপ্লাই করে নিন আই লিডে। এবার আসুন চোখের নিচের অংশে। প্রথমে ফ্লোরমার ন্যুড কাজল অ্যাপ্লাই করে নিন। এরপর আই লিডে যেই ডিপ কালার অ্যাপ্লাই করেছেন তা একটি মিনি ব্লেন্ডিং ব্রাশের সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিয়ে চোখের নিচে বা ওয়াটার লাইনের ঠিক নিচে। এইভাবে ব্লেন্ড করতে অসুবিধা লাগলে ফ্লোরমার স্মোকি আই আইলাইনার টা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, এতে এক্সট্রা স্মাজিং সাইড দেয়া থাকে যা দিয়ে সহজেই অ্যাইশ্যাডো বা কাজল স্মাজ বা ব্লেন্ড করে নিতে পারবেন। 

এখন ফ্লোরমার ডিপ লাইনার দিয়ে আই লাইনার দিয়ে নিন। উপরের এবং নিচের আই ল্যাশে ফ্লোরমার হিরো মাসকারা দিয়ে নিন। এছাড়া বিগ এন্ড বোল্ড মাসকারাও ব্যবহার করতে পারেন। ইনার কর্নার হাইলাইট করে নিন আর আইল্যাশ পড়ে নিন।

ব্যস! আপনার সুপার গর্জিয়াস আই মেকআপ কমপ্লিট।

আই লুকের পর ফ্লোরমার কিস মি মোর, ফ্লোরমার কালার মাস্টার লিপস্টিক বা ফ্লোরমার সিল্কম্যাট লিপস্টিক থেকে একটি সুন্দর ন্যুড শেইডের লিপস্টিক বেছে নিন আপনার ড্রেসের সাথে মিলেয়ে এবং তা অ্যাপ্লাই করে নিন।

আপনার ঈদের রাতের গ্ল্যামারাস লুক নিয়ে আপনি একদম রেডি!! দেখলেন তো, কতো সহজেই এক ব্র্যান্ডের সব প্রোডাক্ট দিয়ে কোনো ঝামেলা ছাড়াই পেয়ে গেলেন আপনার পারফেক্ট ঈদ লুক!!

লিখেছেন –
রাবেয়া চৌধুরী পিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published.