Hair Care

ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই 

ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই 

 

শীত আসি আসি করলেই ময়েশ্চারাইজার লোশন, বডি বাটার, লিপ বাম সহ স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কেনার ধুম পরে যায়। আর যাদের আমার মতো ড্রাই স্কিন তারা যেকোন প্রোডাক্ট কেনার সময়  মোড়কে  ভিটামিন ই আছে কিনা এটা নিশ্চয়ি চেক করে নিতে ভুলেন না?

 

ঠিক কেন ভিটামিন ই কে স্কিনকেয়ারে এতটা ইম্পরট্যান্স দেয়া হয়?ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই কিভাবে এবং কেন ব্যবহার করা হয় সেটা নিয়েই আমার আজকের লেখা!

 

 

রূপচর্চার জন্য ভিটামিন ই বেশ পপুলার একটা ইনগ্রেডিয়েন্ট!  ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য এর উপকারিতা গুলোর জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।

 

ইনফ্ল্যামেশন কমাতে ভিটামিন ই

 

এটি প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন কমাতে সাহায্য করে। আমাদের অনেকেরই পিম্পল অথবা এলার্জির কারনে স্কিন অনেকটাই সেনসিটিভ হয়ে যায়। ড্যামেজড স্কিন রিপেয়ার করার ক্ষেত্রে বিউটি কন্সালট্যান্টরা বলেন, প্রথমেই যেন ত্বককে এর প্রয়োজনীয় ময়েশ্চারটা দেয়া হয়।

 

তারুণ্য বজায় রাখতে ভিটামিন ই

 

আমাদের ত্বককে আরও তরুণ দেখাতে আরও মসৃণ দেখাতে ডেইলি ব্যবহারে ভিটামিন ই রাখা উচিত। স্কিনের তারুণ্য ধরে রাখতে ভিটামিন ই বেশ ভালো কাজ করে। এর এন্টি এজিং প্রপার্টি ত্বককে রাখে টান টান। কাজেই প্রিম্যাচিউর এজিং বা সময়ের আগেই ত্বকের এজিং ভাব দূর করতে ভিটামিন ই যুক্ত মশ্চারাইসার ব্যবহার করা উচিত।

 

মুখের দাগ দূর করতে ভিটামিন ই

 

আমাদের ত্বকে যদি অনেক পুরনো কাটা দাগ, ব্রণের দাগ বা পক্সের দাগ থাকে তবে রেগুলার ভিটামিন ই ময়েশ্চারাইজার  ব্যবহার করা উচিত। এর ফলে , ধীরে ধীরে দাগটা হালকা হবে। এ ধরনের দাগ হালকা করতে ভিটামিন ই ময়েশ্চারাইজার খুবই কার্যকরী। এগুলো স্কিন কেয়ারে অথবা রূপচর্চায় ভিটামিন ই ময়েশ্চারাইজার খুব ভাল কাজ করে।

 

ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট

 

প্রতিদিনের কাজে আমাদের বের হতেই হয়। আর বাংলাদেশের মতো একটা দেশে, শীত হোক আর গ্রীষ্ম, রোদের প্রখরতা থাকে সারা বছর জুড়েই। কাজে সানবার্ন বা সান ড্যামেজ এর শিকার হওয়াটা যেন একদম প্রতিদিনেরই ঘটনা!

সূর্যের ইউ ভি রে কতটা এই ব্যপারটা কম বেশি আমরা সবাই-ই জানি। কিন্তু সান ড্যামেজ যখন হয়েই গেলো, সেখান থেকে কিভাবে ফেরত আসবো, তা কি জানি?

 

এখানেই চলে আসে ভিটামিন ই এর অবদান! টপিক্যালি ভিটামিন ই অ্যাপ্লাই করলে, ত্বক ইন্সট্যান্টলি ময়েশ্চারাইজড হয়। কিন্তু সেই সাথে ভিটামিন ই কাজ করে ত্বকের গভীরের লেয়ার পর্যন্ত।  সান বার্ণ হওয়া কোষ গুলো আস্তে আস্তে হিল হতে সাহায্য করে। সান বার্ন হলে,ফ্রি র‍্যাডিকেল রিয়েকশনের মতো করে ত্বকের কোষ গুলো ড্যামেজ হতে থাকে। ভিটামিন ই তে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ওই রিয়েকশনকে থামিয়ে দেয়। ফলে সেল ড্যামেজ ও থেমে যায় । রূপচর্চায় ভিটামিন ই মইশ্চারাইজার এর কোন তুলনা হয় না। রূপচর্চায় ভিটামিন ই ময়েশ্চারাইজার ত্বক কে করে তলে মসৃণ ও উজ্জ্বল। ভিটামিন ই এর সাহায্যে আমরা সুন্দর সুস্থ ত্বক পেতে পারি।

 

 

 

 

(১) ত্বকের ব্যবহারে ভিটামিন ই

আমাদের যাদের সাধারণ, শুষ্ক ত্বক তারা ভিটামিন ই যুক্ত ময়েশ্চারাইজার আমাদের ত্বকে আলতো করে ম্যাসাজ করতে পারি। যদিও, আমি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য প্রথমে দুই হাত দিয়ে ম্যাসাজ করাটা বেশি প্রেফার করি। আমরা যদি এই পদ্ধতিতে ভিটামিন ই ব্যবহার করি তবে আমরা অন্য কোন ক্রিম বা সিরাম ব্যবহার করব না। এই পরামর্শগুলি থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে যারা একটু বয়স্ক। যেহেতু ভিটামিন ই আমাদের ত্বক থেকে সূক্ষ্ম রেখা দূর করতে পারে।

(২) হাটু ও কনুই কালো দাগ দূর করতে-

ত্বকের আগের ক্ষতির দাগ দূর করার ক্ষেত্রে ভিটামিন ই অতুলনীয়। আমাদের কনুই এবং হাঁটুতে কালো জায়গাগুলতে ভিটামিন ই যুক্ত লোশন অথবা ময়েশ্চারাইজার কনুই এবং হাঁটুতে ব্যবহার করা।দুই থেকে তিন সপ্তাহ ব্যবহার করার পর, আমরা একটি বড় পার্থক্য লক্ষ্য করতে পারব।

ঘুমানোর আগে ভিটামিন ই এর ময়েশ্চারাইজার বা লোশন  মুখে, হাতে ও পায়ে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পরি। তাহলে আমরা ফাটা, কালো দাগ অস্বস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া খুব সহজেই সম্ভব। আমরা এটি ডেইলি ব্যবহারে অনেক উপকৃত হব।

 

(৪) চোখের ডার্ক সার্কেল দূর করতে-

আমরা অনেকেই আছি যারা চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে অনেক ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু তেমন কোন উপকার পেতে পারি নি। যদি আমরা ভিটামিন ই যুক্ত মইশ্চারাইজার ডেইলি ব্যবহার করি তাহলে খুবই কম সময়ে ভালো ফল পেতে পারি।

(৫)  কাটা দাগ বা ব্রণের দাগ দূর করার জন্য-

ভিটামিন ই ত্বকের স্বাস্থ্য এবং চেহারার জন্য এর উপকারিতাগুলির জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। এটি প্রদাহ কমাতে এবং আমাদের ত্বককে আরও তরুণ দেখাতে আমাদের ত্বকে ভিটামিন ই জাতীয় মইশ্চারাইসার ব্যবহার করা উচিত। ভিটামিন ই হল একটি পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরের আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে সমর্থন করতে এবং আমাদের কোষগুলিকে পুনরায় উৎপাদন করতে সাহায্য করে। এটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আমাদের দৈনন্দিন ত্বকের জন্য যথেষ্ট প্রয়োজনীয়।

 

 

ভিটামিন ই অ্যান্টি-এজিং ট্রিটমেন্ট হিসেবেও আমাদের মুখে ব্যবহার করা যেতে পারে। ভিটামিন ই যুক্ত মইশ্চারাইজার শোবার আগে প্রয়োগ করা ভাল যাতে এটি সম্পূর্ণরূপে শোষণ করতে পারে।

 

যদি সকালে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে এর উপরে মেকআপ বা সিরাম লাগাতে আমদের অসুবিধা হতে পারে।

 

সাধারণত, আমরা আমাদের মুখে ভিটামিন ই ধারণকারী সিরাম বা তেলের মিশ্রণও ব্যবহার করতে পারি। দাগ দূর করার জন্য ভিটামিন ই ব্যবহার করা, অল্প সময়ের জন্য বিউটি ট্রিটমেন্ট মাস্ক ব্যবহার করা বা ভিটামিন ই আছে এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারি।

 

রাতারাতি অ্যান্টি-এজিং বা স্কিন-কন্ডিশনিং এজেন্ট হিসাবে ভিটামিন ই খুব ভাল কাজ করে।

 

আমাদের ত্বকে ভিটামিন ই মইশ্চারাইজার ব্যবহারে আমাদের ত্বক হয়ে উঠবে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল।প্রথমে আমরা আমাদের ত্বকটি যে কোন ক্লিন্সার দিয়ে ক্লিন করি। তারপর হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলি এবং আমাদের ত্বক শুকিয়ে নেই।এরপরে আমরা ভিটামিন ই যুক্ত যেকোনো মইশ্চারাইজার দিয়ে

আমাদের ত্বকে অ্যাপ্লাই করি। কিন্তু সব ব্র্যান্ড এর  ময়েশ্চারাইজার তো এক নয়। তাই আমাদের উচিত বুঝে শুনে যে কোন পণ্য নির্বাচন করা। আমিও যেহেতু ভিটামিন ই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করছি আর অনেক  ভাল ফলও পেয়েছি তাই আমি কোন ব্র্যান্ড এর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করছি তা আপনাদের সাথে সেয়ার করতে চাই। আমি বর্তমানে যেই  ময়েশ্চারাইজারটি ব্যবহার করছি সেটি হল আর্থ বিউটি অ্যান্ড ইউ এর ভিটামিন ই মইশ্চারাইজিং বডি মিল্ক। এটি ব্যবহার করে আমি বেশ ভাল ফল পাচ্ছি। আমার বডি এবং মুখে অনেক কাল দাগ ছিল জা এখন অনেক তাই কমে গেছে এবং আমআর ত্বক এখন অনেক উজ্জ্বলও দেখায়।

 

লিখেছেন –
নাফিসা নুসরাত নূর

Leave a Reply

Your email address will not be published.